ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪ 

যেভাবে হলো যৌনতার ইতিহাসের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:০৯, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

আপডেট: ১৫:১৫, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

শেয়ার

যেভাবে হলো যৌনতার ইতিহাসের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার

যৌনতার ইতিহাসের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার বলা হয় ভায়াগ্রাকে। কিন্তু মজার বিষয় হল, এই ওষুধটি আবিষ্কার হয়েছিল দুর্ঘটনাবশত অন্য রোগের ওষুধের পরীক্ষার চালানোর সময়। যে ওষুধটির প্রয়োজনীয়তা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।

বিবিসি জানিয়েছে, ভায়াগ্রা সর্বপ্রথম বিক্রি শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। বাজারে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এটি সবচেয়ে বেশি বিক্রীত ওষুধে পরিণত হয়। মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের আবিষ্কৃত এই ওষুধ এখন তাদের বিশাল অর্থ উপার্জনের মেশিনে পরিণত হয়েছে। শুধুমাত্র প্রথম তিন মাসে মার্কিনিরা লিঙ্গ শিথিলতা দূর করার এই ওষুধের পেছনে আনুমানিক ৪০ কোটি ডলার খরচ করেছে।

ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলার হতে পারেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি ভায়াগ্রার পোস্টার বয় হয়েছিলেন। খ্রিস্টানদের আধ্যাত্মিক নেতা পোপও ভায়াগ্রার প্রতি তার সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছিলেন।

১৯৯০ এর দশকের গোঁড়ার দিকে, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ‘ফাইজার সিলডেনাফিল ইউকে’ একটি বিশেষ উপাদান পরীক্ষা করেছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল ওই উপাদান দিয়ে উচ্চ রক্তচাপ এবং এনজিনা বা বুকে ব্যথা নিরাময়ের ওষুধ তৈরি করা। এজন্য কোম্পানিটি গবেষণা কেন্দ্রে গবেষণা চালায় এবং ওষুধটি পরীক্ষার জন্য শুধুমাত্র কিছু যুবক স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োগ দেয়।

তবে এই গবেষণার সাথে জড়িত এক বিজ্ঞানী বলেন, গবেষণা চলাকালীন তারা উচ্চ রক্তচাপ প্রশমনে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাননি। তিনি বলেন, আমরা খুব হতাশ হয়ে পড়ি এবং মনে হচ্ছিল প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু তারপর একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, শেষ দশ দিন ওষুধটির পরীক্ষা চালানো হবে এবং ফলাফল কী হয় দেখতে স্বেচ্ছাসেবকদের উপর আরও ওষুধ প্রয়োগ করা হবে। তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের এই ওষুধটি দিনে তিনবার টানা ১০ দিন খেতে বলা হয়।

কিন্তু যখন এই ওষুধের পরীক্ষা শেষ হয়, তখন তাদের শরীরে এক অস্বাভাবিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই পরীক্ষার সাথে জড়িত নার্সরাও পর্যবেক্ষণ করেন যে, ওষুধ গ্রহণকারীরা লিঙ্গের উত্থান স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হচ্ছে বলে তাদের জানিয়েছেন। তারা বলেন যে, বিষয়টি কিছুটা বিব্রতকর, কিন্তু আমি লক্ষ্য করছি যে আমার যৌনাঙ্গের শক্তি আগের চেয়ে বেশি হয়ে গিয়েছে।

এ ধরণের প্রতিক্রিয়া গবেষক দলটির জন্য খুব আশ্চর্যজনক এবং অপ্রত্যাশিত ছিল। পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে, ফাইজার কোম্পানি স্ট্যামিনা বা শারীরিক সামর্থ্যের ওপর নতুন এক গবেষণা চালায়। ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরের সাউথমিড হাসপাতালে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ শিথিলতায় ভোগা রোগীদের উপর ওষুধটি পরীক্ষা করা হয়।

ভায়াগ্রার ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলো এতটাই সফল হয়েছিল যে ফাইজার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি বাজারে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। ছয় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন-এফডিএ ওষুধটি বিক্রির অনুমোদন দেয়। ২০০৮ সালে এর বার্ষিক বিক্রি প্রায় দুই বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকে।

দ্য নিউজ/ এ এ

live pharmacy
umchltd