ঢাকা সোমবার, ২০ মে ২০২৪ 

নীতি সুদহার বাড়লো

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:২২, ৯ মে ২০২৪

শেয়ার

নীতি সুদহার বাড়লো

নতুন করে বাড়ানো হয়েছে নীতি সুদের হার। পাশাপাশি চালুর ১০ মাসের মাথায় ব্যর্থ হয়ে এসএমএআরটি বা স্মার্ট সুদহার পদ্ধতি বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে নীতি সুদহার দশমিক ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি ঋণের সুদহার বাজারভিত্তিক করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বুধবার  বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একাধিক সার্কুলার জারি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বুধবার মুদ্রানীতি কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নীতি সুদহার বিদ্যমান শতকরা ৮ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। নীতি সুদহার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, নীতি সুদের করিডোরের ঊর্ধ্বসীমা এবং নিম্নসীমাও বাড়ানো হয়েছে। পরিপত্রে বলা হয়েছে নীতি সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ) ক্ষেত্রে সুদহার ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশে এবং নীতি সুদহার করিডোরের নিম্নসীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বৃদ্ধি করে ৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নীতি সুদহার হলো রেপো। ব্যাংকগুলো যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে, তখন তার সুদহার ঠিক হয় রেপোর মাধ্যমে। আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে সুদ হারে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়, তাকে বলে ব্যাংক রেট। রেপো রেট বৃদ্ধি করায় ব্যাংকগুলোর অর্থ নেওয়ার খরচ বাড়বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে।

রেপো হার বাড়া মানে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার ও ব্যাংকের টাকা ধারের ওপর সুদহার বাড়বে। একই সঙ্গে এর প্রভাবে ব্যাংকে আমানত ও ঋণের সুদহারও বাড়বে। এতে আমানত রাখার পরিমাণ বাড়বে এবং ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমবে, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে বলে সাধারণভাবে মনে করা হয়।

এদিকে দীর্ঘদিন সুদহারের সীমা নয় শতাংশে বেঁধে রাখার পর গত অর্থবছর থেকে চালু হয়েছিল স্মার্ট রেট পদ্ধতি। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তসহ নানামুখী চাপে পড়ে এসএমএআরটি বা স্মার্ট পদ্ধতি  (সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) প্রত্যাহার করা হয়েছে। ব্যাংকঋণের সুদহার সম্পূর্ণ বাজারভিত্তিক করার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার নির্দেশনায় জানিয়েছে, ব্যাংক খাতে ঋণের চাহিদা ও ঋণযোগ্য তহবিলের জোগান সাপেক্ষে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হবে। তবে ঋণের বাজারভিত্তিক সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচটি নির্দেশনা পরিপালন করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।

২০২০ সালের এপ্রিল থেকে গত বছরের জুন পর্যন্ত সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ছিল নয় শতাংশ। ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন দেয় আইএমএফ। যার অন্যতম শর্ত ছিল বেঁধে দেওয়া সুদহার থেকে বেরিয়ে আসা। ঋণের শর্ত পরিপালনের জন্য গত বছরের জুলাই থেকে সুদের হারের নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ পদ্ধতি চালুর পর থেকে স্মার্ট রেটের সঙ্গে নির্ধারিত মার্জিন যোগ করে সর্বোচ্চ সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে।

গত জুলাই থেকে প্রতি মাসের শেষ কর্মদিবসে স্মার্ট রেট ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে, গত এপ্রিলের স্মার্ট রেট কত, আনুষ্ঠানিকভাবে তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

দ্য নিউজ/ এমআরএন

live pharmacy
umchltd