ঢাকা সোমবার, ২০ মে ২০২৪ 

উন্নয়ন বাজেট হচ্ছে আড়াই লাখ কোটি টাকার

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ৮ মে ২০২৪

শেয়ার

উন্নয়ন বাজেট হচ্ছে আড়াই লাখ কোটি টাকার

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রস্তুত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট চূড়ান্ত করেছে কমিশন। মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় এডিপির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। শিগগিরই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় নতুন অর্থবছরের এডিপি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, নতুন অর্থবছরের এডিপি খসড়া চূড়ান্ত করেছে কমিশন। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি ও বৈদেশিক ঋণ থেকে ১ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এডিপিতে সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তা মিলে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন মিলিয়ে নতুন এডিপির আকার দাঁড়াবে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত এডিপিতে সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তা মিলে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরেও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন আছে ১৩ হাজার ২৮৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে নতুন এডিপির আকার দাঁড়াবে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা।  সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এই খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। তবে মন্ত্রণালয় ভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সেখানে বরাদ্দ থাকছে ৩৮ হাজার ৮০৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

এছাড়া ১৫টি খাতের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৪০ হাজার ৭৫১ কোটি ৮৬ লাখ এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩১ হাজার ৫২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে শিক্ষা খাত। অন্যান্য খাতের মধ্যে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলী ২৪ হাজার ৮৬৮ কোটি ৩ লাখ, স্বাস্থ্যে ২০ হাজার ৬৮২ কোটি ৮৮ লাখ, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি ২১ লাখ এবং কৃষি খাতে ১৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নতুন এডিপির যে আকার নির্ধারণ করা হয়েছে এটি চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির তুলনায় ২ হাজার কোটি বা শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি। এছাড়া সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) তুলনায় ২০ হাজার কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি। আগামী অর্থবছরে পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এই খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। তবে মন্ত্রণালয় ভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। সেখানে বরাদ্দ থাকছে ৩৮ হাজার ৮০৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
এছাড়াও, শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবায় ৬ হাজার ৪৯২ কোটি ১৮ লাখ, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিতে ৪ হাজার ৭৮৬ কোটি ৯২ লাখ, ধর্ম-সংস্কৃতি ও বিনোদনে ৩ হাজার ৪৯২ কোটি, সামাজিক সুরক্ষায় ৩ হাজার ৩০৪ কোটি, জনশৃঙ্খলা ও সুরক্ষায় ৩ হাজার ৩০৮ কোটি এবং সাধারণ সরকারি সেবা খাতে দেওয়া হচ্ছে ২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরের এডিপিতে মন্ত্রণালয় ভিত্তিক দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে। সেখানে বরাদ্দ থাকছে ৩২ হাজার ৪২ কোটি টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ বিভাগ ২৯ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। এছাড়া, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৬ হাজার ১৩৫ কোটি, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ১৩ হাজার ৭৪১ কোটি, রেলপথ মন্ত্রণালয় ১৩ হাজার ৭২৫ কোটি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা। আরও আছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ১০ হাজার ৩৭৩ কোটি এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৮ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দসহ মোট প্রকল্প থাকছে ১ হাজার ৩৩৭টি। এরমধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ১ হাজার ১৪৯টি, কারিগরি সহায়তার ৮৬টি এবং সমীক্ষা প্রকল্প রয়েছে ২৩টি। মোট প্রকল্পের মধ্যে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি থেকে স্থানান্তর হবে ১ হাজার ২৭৭টি প্রকল্প। বাকিগুলোর মধ্যে নতুন অনুমোদিত প্রকল্প রয়েছে ৬০টি।

উন্নয়ন বা মূলধনী বাজেট কী :  দেশের উন্নয়নমূলক কাজের জন্যে যে বাজেট করা হয় তাকে মূলধনী বাজেট বলে। এ বাজেটে সরকার গৃহিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য আয় ও ব্যয়ের হিসাব দেখানো হয়। যেমন এক বছরে কৃষি, শিল্প, যোগাযোগ, পরিবহন, বিদ্যুৎ ইত্যাদি খাতের উন্নয়নের জন্য যে ব্যয় হবে তা এ বাজেটে দেখানো হয়। পাশাপাশি এ ব্যয় নির্বাহের জন্য কোনো কোনো উৎস থেকে আয় সংগৃহীত হবে তাও এ বাজেটে উল্লেখ করা হয়।

সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে মূলধন বাজেটে দেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপির জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ও প্রত্যাশিত আয়ের পরিমাণ দেখানো হয়। এ বাজেটের আয় প্রধানত রাজস্ব বাজেটের উদ্বৃত্ত এবং সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি ঋণ ও অনুদানের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়ে থাকে। 

দ্য নিউজ/ এমআরএন

live pharmacy
umchltd