ঢাকা সোমবার, ২০ মে ২০২৪ 

দেশে ৩৮ দিনে বজ্রপাতে ৭৪ জনের মৃত্যু

বিশেষ প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ২০:৩১, ৯ মে ২০২৪

আপডেট: ২০:৪৭, ৯ মে ২০২৪

শেয়ার

দেশে ৩৮ দিনে বজ্রপাতে ৭৪ জনের মৃত্যু

চলতি মৌসুমে বজ্রপাতে ৭৪ জন মারা গেছে। এপ্রিল ও মে মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত ৩৮ দিনে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই কৃষক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এসব তথ্য ওঠে এসেছে। 

 

স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন 'সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম'র ওই গবেষণায় বলা হয়, এপ্রিল মাসে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ২০ ও নারী ১১ জন। আর মে মাসের ৮ দিনে মারা গেছে ৪৩ জন। যার মধ্যে ৩৪ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। মারা যাওয়াদের মধ্যে ৩৫ জনই কৃষক। বৃহস্পতিবার ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা মূলক কর্মসূচি পালনকালে সংগঠনটি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 

 

জপ্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসে একদিনেই মারা গেছেন ১১ জন ও আহত হয়েছেন ৯ জন। খাগড়াছড়িতে মা-ছেলেসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।


সংগঠনটি কৃষকের জীবন রক্ষায় মাঠে কাজ করা কৃষকদের তিন দফা পরামর্শ পালন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি বজ্রপাত হলে কৃষকরা কীভাবে নিজেদের নিরাপদ রাখবেন সেই কৌশলও বলে দিয়েছেন সংগঠনটির সদস্যরা।


এ লক্ষে গত শনিবার থেকে এসএসটিএএফ’র একাধিক প্রতিনিধিদল মানিকগঞ্জের সিংগাইর, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান ও ঢাকার নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ  উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত প্রায় ৫০০ কৃষকদের গ্রুপ করে বজ্রপাত থেকে নিজেদের জীবন রক্ষার কৌশল জানানো হয়। 
 

সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা, গবেষণা সেলের প্রধান আব্দুল আলিম, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ ও স্বেচ্ছাসেবী মো. শরিফুল ইসলাম। এ সময় কৃষকদের মাঝে কোমল পানি, শরবত ও স্যালাইন বিতরণ করা হয়।


সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দ্রুত মাঠে মাঠে আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানান। 
পাশাপাশি বছরের মার্চ থেকে জুন এই চার মাস কৃষকদের মাঝে বজ্রপাত সচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করারও পরামর্শ দেন। 


কৃষকদের জন্য দেয়া পরামর্শগুলো হলো- ১. খোলা আকাশের নিচে থাকলে আকাশে কালো মেঘ দেখার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহণ। ২. বৃষ্টি হলে গাছের নিচে অবস্থান না করা। ৩. খোলা আকাশের নিচে কাজ করার সময় পায়ে জুতা পরিধান করা। মাঠে থাকা অবস্থায় হঠাৎ বজ্রপাত হলে নিচু হয়ে শুয়ে পড়া। 


ফোরামের সভাপতি ড. কবিরুল বাশার জানান, বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ দুইটি। বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে গাছ বিশেষ করে মাঠের উঁচু গাছ কেটে ফেলা। হাওর অঞ্চলের মাঠে আগেও তেমন গাছ ছিল না। এখন অন্যান্য এলাকার গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে মাঠে বা খোলা জায়গায় যেসব মানুষ থাকেন বজ্রপাতের এক কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিবাহী উঁচু জিনিস হিসেবে সেই মানুষকেই পায়। মানুষ না থাকলে মাঠের গবাদি পশু। ফলে মানুষ মারা যায়, গবাদি পশুও মারা যায়। 


তিনি আরও বলেন, অনেকে মনে করেন ওই সময় গাছের তলায় আশ্রয় নেয়া নিরাপদ, আসলে এটা ঠিক নয়। আশ্রয় নিতে হবে বাড়িঘরে বা পাকা স্থাপনার নিচে। তার মতে, সনাতন পদ্ধতিতে লাইটেনিং অ্যারেস্টার লাগালে বজ্রপাতে হতাহতের হাত থেকে বাঁচা যায়। এতে খরচ কম। একটি বাড়িতে ১০ হাজার টাকা খরচ করেই লাগানো যায়। আর সরকার হাওর এবং খোলা জায়গায় এগুলো লাগানোর উদ্যোগ নিতে পারে।
 


 

দ্য নিউজ/ এফ এইচ এস / কে টি

live pharmacy
umchltd

সম্পর্কিত বিষয়: