তিমিদের ফোনেটিক বর্ণমালা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। স্পার্ম হোয়েল নামের এক প্রজাতির তিমিদের ওপর গবেষণা করে এই তথ্য জানিয়েছেন গবেষকদল। তাদের দাবি, তিমিদের এই ভাষা অনেকটাই মানব সমাজের যোগাযোগ করার মতোই।
আল জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিজ্ঞানভিত্তিক ন্যাচার ম্যাগাজিনে এক গবেষণাপত্রে এই আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ডমিনিকায় বসবাসরত একদল স্পার্ম হোয়েলের ওপর গবেষণা চালান তারা। এসময় তারা দেখতে পান শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে এক প্রকার কোড আদান প্রদান করছে তিমিরা। এই কোড অনেকটা মানুষের ব্যবহার করা মোর্স কোডের মতো। এই কোডগুলোকেই বিভিন্ন শব্দ হিসেবে ব্যবহার করছে তিমিরা। কয়েকটি শব্দ মিশিয়ে একটি সম্পূর্ণ বাক্য তৈরি করে তারা।
গবেষক দলের সদস্য ও গবেষণাপত্রের অন্যতম লেখক প্রত্যুষা শর্মা বলেন, তারা কি বলছে সে বিষয়ে এখনো আমরা জানি না। তবে আমরা তাদের ভাষার অর্থ বোঝার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর আগে বহু বছর ধরে স্পার্ম তিমির যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর গবেষণা করছিলেন বিজ্ঞানীরা। পানির নিচে এক বিশাল রেকর্ডিং স্টুডিও তৈরি করেন তারা। এখানে প্রায় ৬০ টি তিমির বিভিন্ন সময় যোগাযোগের ডেটা সংগ্রহ করেন গবেষকরা।
প্রায় ৮,৭০০ টি বার্তা যাচাই করে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন তারা চারটি মূল শব্দ ব্যবহার করে যোগাযোগ করছে। এগুলোকে তাদের বর্ণমালা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন প্রত্যুষা। তিনি আরো বলেন, অনেকগুলো শব্দ ব্যবহার করেই তিমিরা কথা বলে। তাদের ভাষা অনেকটা মানুষের মতোই। আরেক গবেষক ডেভিড গ্রুবার বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে আমরা এখন আরো দ্রুত তথ্য প্রসেস করতে পারি। তবে তিমিদের ভাষা পুরোপুরি বুঝতে আমাদের আরো কয়েক লক্ষ সাউন্ড ডেটা লাগবে। তবে বিভিন্ন এলাকার মানুষের যেমন ভাষা ভিন্ন হয়, তেমনই বিভিন্ন এলাকার তিমিরাও ভিন্ন ভাষায় কথা বলে।
প্রাণীজগতের মধ্যে স্পার্ম হোয়েলের মস্তিষ্ক সবচেয়ে বৃহৎ। মানুষের চেয়ে তাদের মস্তিষ্ক প্রায় ছয় গুণ বড়। সাধারণত ১০ জনের দলে বসবাস করে থাকে স্পার্ম হোয়েল। এক একটি স্পার্ম হোয়েল প্রায় ৬০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।
দ্য নিউজ/ এস এস
আরও পড়ুন: