কয়েন ব্যবসার কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিটিআই)। তারা হলেন, কাজী মো. ইউছুফ (৪৬) ও মো. মানিক মোল্লা (৬৬)।
বৃহস্পতিবার আগারগাঁও পিবিআই ঢাকা মহানগর উত্তরের অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপরাধে জড়িত থাকায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মামলার বাদী মো. রফিকুল ইসলাম এবং কাজী মো. ইউছুফ পূর্ব পরিচিত।
২০১৫ সাল থেকে পরিচয়ের সূত্র ধরে কাজী ইউছুফ রফিকুলকে জানান যে, ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে ২ দিনের মধ্যে একশত কোটি টাকা পাওয়া যাবে।
ইউছুফ এবং এজাহার নামীয় পলাতক আসামি গোলাম মাওলা (৫০) বাদীকে সিলেটে হযরত শাহ জালাল (রাহ:) ও হযরত শাহ পরান (রাহ:) এর মাজারে নিয়ে ব্যবসার কথা কাউকে না বলার শপথ করান।
পরবতীর্তে তারা রফিকুলকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ধাপে ধাপে মিটিং করেন। মিটিং এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক কয়েন দেখানোর জন্য রফিকুলকে মানিক মোল্লার তার বাসা চাঁদপুরে নিয়ে যান।
মানিক মোল্লার বাসায় গোলাম মাওলা, শামীম, বারি, ইউসুফসহ অজ্ঞাত কয়েকজন মিলে কয়েনটি বিভিন্ন বৈদ্যুতিক আলোতে পরীক্ষা করে দেখান।
রফিকুল দেখার পরে ঢাকা চলে আসেন। তখন মানিক এবং পলাতক আসামি গোলাম মাওলা,বারি, শামিমসহ আরো কয়েক জনের উপস্থিতিতে প্রথমে রফিকুল নগদ ১০ লাখ টাকা মানিককে দেন।
পরবতীর্তে মানিক মোল্লা কয়েনের প্রকৃত মালিক হওয়ায় নন জুডিসিয়াল ৪০০ টাকার স্ট্যাম্পে কয়েনের প্রতিনিধি হিসেবে রফিকুলের সাথে চুক্তি করেন। টাকা লেনদেনের সময় বারি, গোলাম মাওলা, শামীম,আ. রহমান উপস্থিত ছিলেন।
তারপর ইউছুফ এবং মানিক মোল্লা ও গোলাম মাওলা বাদীকে জানান যে, কয়েনটি ঢাকা ডিপ্লোমেটিক জোনে উঠাতে হবে। এই বলে তারা বাদীর নিকট আরো ৫ কোটি টাকা দাবি করেন।
তখন বাদী রফিকুল এবং আসামীদের মধ্যে দর কষাকষি হয়। দর কষাকষির এক পর্যায়ে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ হয়।
রফিকুল পর্যায়ক্রমে বারি, শামীমদের উপস্থিতিতে গোলাম মাওলাকে ৫৫ লাখ টাকা দেন।
এরপর রফিকুল ইউছুফ কয়েন আনার জন্য চাঁদপুর যান। চাঁদপুরে বাদী পৌঁছার আগেই অন্যরা কয়েন নিয়ে চাঁদপুর শহরে একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন।
সেখানে কয়েনের সাজানো মালিক মানিক মোল্লাসহ অন্যান্যদের নগদ ৪৯ লাখ টাকা দেন এবং বাদী ও আসামিরা লঞ্চে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন।
ঢাকার সদরঘাট পৌঁছা মাত্রই সাদা পোশাকধারী ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাদীকে ও ইউসুফকে একটি গাড়িতে উঠিয়ে নেয়। অন্যান্য আসামীদের অন্য একটি গাড়িতে উঠায়। সাদা পোশাক পরিহিত লোকজন কয়েনটি তাদের হেফাজতে নিয়ে ২ থেকে ৩ ঘন্টা পর বাদী রফিকুল এবং ইউসুফকে ছেড়ে দেন।
পরবতীর্তে আসামি গোলাম মাওলার বন্ধু এজাহার নামীয় আসামি শাখাওয়াত হোসেন উপস্থিত হয় এবং আসামি সাখাওয়াত কয়েনটি ফিরিয়ে দিবেন বলে বাদীকে আশ্বস্ত করেন।
পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আসামি সাখাওয়াত বাদীর কাছ থেকে ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা নেন।
এ ঘটনায় ২৫ মার্চ বিমানবন্দর থানাতে ১৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
মামলাটি পিবিআই এর সিডিউল ভুক্ত হওয়ার পর ২৯ এপ্রিল ফেনী ও চাঁদপুর থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
বর্তমানে তারা তিনদিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর আলম।
দ্য নিউজ/ এফ এইচ এস / কে টি
আরও পড়ুন: