ঢাকার ধামরাইয়ে আবাসন প্রতিষ্ঠান ‘আকসির নগর’বন্ধের নামে আদালতের রায়ের জাল নথি তৈরি মামলায় প্রধান আসামি বদরুল সরদারকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
একই মামলায় আরও তিন অভিযুক্ত জেল হাজতে আছে। অভিযুক্ত সবাই ঢাকার ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের আকসির নগর এলাকার বাসিন্দা।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে আকসির নগরের মাটি ভরাট বন্ধে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন বদরুল সরদার। আবেদন পত্রের সঙ্গে আদালতের বাংলা অনুবাদ করা একটি রায়ের কপি সংযুক্ত করে জমা দেওয়া হয়।
ওই নথিতে পর্যালোচনা দেখা যায়, জমা করা বাংলায় অনুবাদ করা আদালতের আদেশটি অভিযুক্তরা নিজেরাই তৈরি করেছেন। সেখানে সিল ও স্বাক্ষরও জালিয়াতি করেছেন। তবে আদেশের মূল কপি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আদালত আকসির নগর মাটি ভরাট বন্ধে করা বদরুল সরদারের রিট পিটিশনের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে নিস্পত্তির আদেশ দেন। নিস্পত্তির বিষয় স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও অভিযুক্তরা আকসির নগর প্রকল্প বন্ধের কথা উল্লেখ জাল নথি তৈরি করে স্থানীয় জনগণ ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে জমা দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেন ও ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠানের করা মামলায় সত্যতা মেলায় গত ১৮ মার্চ ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারক মোসা. কামরুন্নাহারের আদালত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই দিন জামিন নিতে গেলে তিন আসামি, মনসুর আলম (৪৫), লোকমান হোসেন (৩৫) ও সুশীল সরদারকে (৪৭) কারাগারে পাঠানো হয়। এবার প্রধান আসামি মো. বদরুল সরদারকেও (৪৭) গ্রেপ্তার করা হলো। অপর আসামিরা হলেন- মো. সৈওকত আলী (৩২), মো. পলান আলী (৪৫), মো. লাবু সিকদার (৪৮), মো. সাইদুর রহমান (৪৮)।
সূত্র আরও জানায়, ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট আকসির নগর কর্তৃপক্ষ জমিতে মাটি ভরাটের কাজ করতে গেলে অভিযুক্তরা আদালতের রায়ের মাটি ভরাট নিষেধ লিখে বাংলায় একটি নথি তাদেরও দেয়। তারা সেটি বিশ্বাস করে কাজ বন্ধ রাখে। কিন্তু পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আদালত কর্তৃক মাটি ভরাট বন্ধের কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে আকসির নগরের পক্ষে কাজী আহমদুল্লাহ আদালতে রায় জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। সেই মামলায় সিআইডির কাছে জালিয়াতির কথা স্বীকার করে লিখিত জবানবন্দি দেন অভিযুক্তরা। ওই মামলায় গত ১৮ মার্চ সত্যতা পাওয়া গেছে উল্লেখ করে অভিযুক্তের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। ওই মামলায় জামিন নিতে গেলে সেদিনই তিনজনকে কারাগারে পাঠান আদালত।
সেদিন আদালতের আদেশে বলা হয়, আসামিদের বক্তব্য শুনে ও নথি পর্যালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পারস্পরিক যোগসাজশে জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। সব বিবেচনা করে তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হলো। তাদের জেল-হাজতে পাঠানো হোক।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, আসামি বদরুল সরদারের নামে বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, মানব পাচার, চুরিসহ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
দ্য নিউজ/এমএম
আরও পড়ুন: