Deprecated: str_replace(): Passing null to parameter #3 ($subject) of type array|string is deprecated in /var/www/vhosts/thenews24.com/httpdocs/common/config.php on line 174
আগুনে মেজাজে সেদ্ধ চুয়াডাঙ্গার মানুষ, স্বস্তির বৃষ্টি কবে?

আগুনে মেজাজে ‘সেদ্ধ’ চুয়াডাঙ্গার মানুষ, স্বস্তির বৃষ্টি কবে?

চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা

দ্য নিউজ/এমএম

প্রকাশিত : ০৪:১৬ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ শনিবার

একটানা তাপপ্রবাহের গ্রাসে গোটা চুয়াডাঙ্গা। দুর্বিষহ পরিস্থিতি। বেলা বাড়লেই সূর্যের আগুনে মেজাজে জ্বলে পুড়ে খাক (পুড়ে যাওয়া) হচ্ছে জেলার মানুষ।

সূর্যের চোখরাঙানি আর গরমের দাপট দ্রুত কমার সম্ভাবনা নেই, তেমনই পূর্বাভাস দিয়েছে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা বাড়বে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তিও আরও বাড়বে। প্রচণ্ড গরমের কারণে হিট এলার্ট জারি রয়েছে জেলায়।

সকাল হতেই সূর্যের তেজে জ্বলেপুড়ে খাক হতে শুরু করছে জেলাবাসী। তাপপ্রবাহের ভয়াল মূর্তিতে নাজেহাল পরিস্থিতি। ছিটেফোঁটা বৃষ্টিরও দেখা নেই। একটানা তাপপ্রবাহে এ অঞ্চলের খেটে-খাওয়া মানুষদের দুর্বিষহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

তাপপ্রবাহে জেলার রাক্ষুসে চেহারা গরমের। স্বস্তির বৃষ্টির পথ চেয়ে রয়েছে জেলা মানুষ। তবে এখনই স্বস্তির বার্তা দিতে পারছে না জেলা আবহাওয়া অফিস। বৃষ্টি নামবে কবে? সে ব্যাপারেও সর্বশেষ তথ্য মিলছে না।

চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার শনিবার সকাল ৯ টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করে ৩০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল শতকরা ৭০ শতাংশ। এরপর বেলা ১২ টায় রেকর্ড করে ৩৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তখন বাতাসের আর্দ্রতা ছিল শতকরা ২২ শতাংশ। বেলা ৩ টায় তাপমাত্রা বেড়ে দাড়ায় ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, সেইসাথে বাতাসের আর্দ্রাতার পরিমাণ ৪৮ শতাংশ।

চুয়াডাঙ্গায় এত গরম কেন?

আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, এর কিছু প্রাকৃতিক কারণ রয়েছে। অঞ্চল বৈশিষ্ট্যের কারণে তাপপ্রবাহ বেশি হয়। এপ্রিল হচ্ছে সর্বোচ্চ গরম মাস। এই সময়ে পৃথিবী সূর্য থেকে রশ্মি বা কিরণ পায় লম্বালম্বিভাবে। সূর্যকে কেন্দ্র করে যে কক্ষপথ ধরে পৃথিবী ঘুরছে সেখানে পৃথিবী অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ সবচেয়ে কাছ থেকে সূর্যরশ্মি গ্রহণ করছে।

অন্যভাবে বলতে গেলে, এপ্রিল মাসে সূর্য থেকে বাংলাদেশের অবস্থান অন্য সময়ের তুলনায় সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে। যার কারণে সূর্যের তাপ বেশিই পড়ে এই অঞ্চলে।

হাসপাতালে বাড়ছে রোগী চাপ:

প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তীব্র গরমে ডায়রিয়া, পেটের পীড়া, ঠাণ্ডা, জ্বর-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, পানিশূন্যতাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন রোগীরা। হাসপাতাল ১০০ শয্যার হলেও ভর্তি হচ্ছেন ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি রোগী।

এ জেলার উপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাওয়ায় দিন-রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তন থাকায় জনজীবনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তাপদাহ থেকে বাঁচতে এবং বৃষ্টির প্রত্যাশায় মসজিদে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ঝরে পড়ছে আমের গুটি:

এছাড়াও বয়ে যাওয়া তাপ প্রবাহে ঝরে পড়ছে আম-লিচুর গুটি। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আম চাষী আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই বছর বৃষ্টি না হওয়ার কারণে দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ছে। গরমের কারণে আম-লিচুর গুটি ঝরে যাচ্ছে। প্রতিটি গাছে সেচ দেওয়া হচ্ছে, তারপরও গুটি টিকানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে আম-লিচু নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, ‘চুয়াডাঙ্গায় প্রতিদিনই তাপমাত্রার পারদ উঠামানা করছে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। শনিবার বেলা ৩ টায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ জেলায় টানা ২৬ দিন মাঝারি, তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এবছর বৃষ্টিপাত নেই বললেই চলে। ২৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে সামান্য বৃষ্টি হলেও ভারী বর্ষণ হয়নি। আপাতত কোন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও নেই।’