এবারের অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় শুরু থেকে আলোচনা ও সমালোচনার শীর্ষে তিন ব্যক্তি। মোস্তাক-তিশা-সাবরিনা। এই আলোচনাটি সুখকর না হলেও ঘুরে ফিরেই আলোচনাটি সামনে আসছে। অনেক পাঠক লেখকের মন্তব্য বই মেলায় মানুষ আসে জ্ঞান আহরণের জন্য। সেই বই মেলায় মোস্তাক-তিশা আর ডা. সাবরিনা যখন আলোচনার বিষয়বস্তু তখন রুচিশীল লেখক-পাঠকরা লজ্জা পায়।
এসব বিষয় নিয়ে কবি, লেখক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মিজান মালিকের মুখোমমুখি হয়েছিল দ্য নিউজ। এবারের বই মেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার কাব্যগ্রন্থ ‘মায়াতন্ত্র’।
বইমেলা প্রসঙ্গে মিজান মালিক দ্য নিউজকে বলেন, লেখালেখি ও সাংবাদিকতার মাধ্যমে অনেক বড় বার্তা দেয়া সম্ভব। একটি ভালো রাষ্ট্র গড়ার জন্য, কল্যাণকর সমাজ তৈরির জন্য, মানুষকে সুসংগঠিত, সভ্য করার জন্য, মানুষের মধ্যে মানবিকবোধ জাগ্রত করার জন্য লেখা লেখির এই প্ল্যাটফরমটা অনেক বড় জায়গা। এ কারণে আমি এটি বেছে নিয়েছি। আমি মানুষের জন্য কিছু করবো, এই চিন্তা থেকে আমার লেখিালেখির ঝোঁকটা আসলো ।
তিনি বলেন, একজন লেখককে অনেক কষ্ট, অনেক শ্রম এবং ত্যাগ করতে হয়। বর্তমানে এমন কিছু লেখকের আবির্ভাব হয়েছে যাদের লেখা পড়লে কষ্ট লাগে। এই যে অসাম্য, বিভ্রান্তি, আমাদের পাঠ্যপুস্তকও অমেরামতযোগ্য হয়ে গেছে। এটাও কিন্তু তার একটা অংশ।
সম্প্রতি বহুল সমালোচিত মোস্তাক-তিশা প্রসঙ্গে মিজান মালিক বলেন, তিশাকে আমার মনে হয়েছে অনেক লোভী প্রকৃতির মেয়ে। খুবই কম বয়েসে তিনি বিলাসী জীবন-যাপনের উপভোগ করবার একটা লোভ তার ওপর চেপে বসেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই খন্দকার মোস্তাক নাম শুনে আসছি আমার ছোটবেলা থেকে । এখন বোঝেন। উনি কোন আমল থেকে মোস্তাক।
তিনি বলেন, আমার পেশাগত জীবনের শুরু থেকে এই আইডিয়াল স্কুলে ২৫ বছর আগে এই মোস্তাকের অনিয়ম-দুর্নীতি সম্পর্কে জানতে পারি। তিনি এই স্কুলে রাজত্ব করছেন তখন থেকে। আইডিয়াল স্কুলে ভর্তিবাণিজ্য এবং এখানে যে লুটপাট চলে তার সঙ্গে তিনি যুক্ত। তদন্তে তার নাম এসছে।
আমি বলবো যে, আইডিয়াল স্কুলে যখন আমাদের সন্তানদের দেই তখন মনে করি আমরা একটি আইডল স্কুলে দিচ্ছি। নৈতিক স্কুলে দিচ্ছি , নৈতিক কলেজে দিচ্ছি। যেখানে আমাদের সন্তানরা সভ্যতা, নৈতিকতার শিক্ষা অর্জন করবে। কিন্তু মোস্তাক যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তা আমাদের জন্য লজ্জার। এর মাধ্যমে তিনি একটি রেখা একে দিলেন যে, এখান থেকে প্রলোভন দেখিয়ে যে কাউকে (ছাত্রী) নিয়ে যাওয়া যায়। দেশের স্বনামধন্য আইডিয়াল স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হয়ে কম বয়সি শিক্ষার্থী তিশাকে বিয়ে করে মোস্তাক সমাজে একটি লজ্জাজনক সংস্কৃতি চালু করেছেন।
ডা. সাবরিনা প্রসঙ্গে মিজান মালিক বলেন, ডা সাবরিনা যে একজন অপরাধী এটা কিন্তু আদালতে সাব্যস্ত হয়ে গেছে। গত দু’দিন আগেও তার বিরুদ্ধে একটি মামলার চার্জ গঠন হয়েছে। সেখানে একাধিক অভিযোগ এসেছে। তিনি জামিন পাওয়ার পর মনে হচ্ছে এঞ্জেল হয়ে গেছেন। জামিনে মুক্ত হয়ে তিনি বলছেন, যে চার ইঞ্চি জায়গার মধ্যে তিনি কারাগারে কিভাবে থাকতেন, কিভাবে ঘুমাতেন।। কতজন পাশে রেখে তিনি ঘুমাতেন, কার পাশে তিনি ঘুমাতেন।
হ্যাঁ, জেলখানা একটি অভিজ্ঞতার জায়গা। সংশোধনের জায়গা। এটা ভালো যে তার জেলখানার অভিজ্ঞতা আছে। এই জেলখানা থেকে একজন বন্দি তীক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি তার নিজের অপরাধ ঢাকার জন্য এই মোস্তাক-তিশা গংদের মতো একটি চক্রান্তে জড়ালেন।
তারা পাঠকের জন্য বই লিখছেন, সমাজের জন্য লিখেছেন এটা আমি মনে করি না। নিজেরা যে ক্রাইম করেছেন এটা ঢাকার জন্য এবং আলোচনায় থাকার জন্য বই লিখেছেন তারা।
লেখক, সাংবাদিক মিজান মালিক মনে করেন, অপরাধ করে যেনো কেউ হিরো হওয়ার সুযোগ না পায়। এজন্য সামাজিকভাবে অপরাধীদের বয়কট করা উচিত।
ফশা